ফাইভারে যারা প্রচুর কাজ পেয়েছে, তাদের কাজ পাওয়াটা মিরাকল ছিলোনা। এসএসসি পাশ রাকিবের ৩মাসে একটা মাত্র গিগে ২৪০০ডলার আয়, ফেনীর আতাউরের ২বছরের ২৬,০০০ডলার আয়, রাঙ্গামাটির এলইডিপি স্টুডেন্টদের জানুয়ারি মাস থেকে কাজ শুরু করে এখন পযন্ত প্রায় ৫০০০ডলার আয়, সব কিছুর পিছনেই কারণ একটাই ছিলো। যেই কাজটি তারা করার কারনে বিশাল সফলতা পেয়েছে, সেগুলো সবার সাথে শেয়ার করছি। আপনিও সেই ভাবে শুরু করলে ১৫দিনের মধ্যে বিশাল ফলাফল পাবেন। আপনার আর তাদের মধ্যে পার্থক্যটুকু জেনে নিন, সেই অনুযায়ি কাজ করুন, সফল হবেন অবশ্যই।
তাদের সফলতার কারনের আগে জেনে নিন, আপনি কেন সফল হচ্ছেননাঃ
মাথাতে রাখতে হবে, ফাইভারে এখন প্রচুর ফ্রিল্যান্সার। এক লোগো ডিজাইনের জন্য প্রায় ১লাখ ৪০হাজার গিগ রয়েছে। আপনি গিগ প্রস্তুত করে বসে থাকলে সেই গিগে কাজ পাওয়ার সম্ভাবনা ১লাখ ৪০হাজার জনের সম্ভাবনার পর আসবে। এর আগে কাজ পেয়ে গেলে সেটা হচ্ছে কপাল।
আবার আপনি হয়তি বায়ার রিকোয়েস্ট পাঠাচ্ছেন, সেখানেও প্রচুর বায়ার অফার দিচ্ছে, কিন্তু বায়ার রিকোয়েস্ট হয়ত আছে ১৫-২০টা। সুতরাং সেখানেও কাজ পাওয়ার সম্ভাবনাটা অনেক অনেক ক্ষীন হয়ে যাচ্ছে দিন দিন।
তাহলে কি করবেন, কিভাবে উপরের ব্যক্তিরা কাজ পাচ্ছেনঃ
- তারা প্রত্যেকেই শুরুতে প্রতিদিন ৪-৫ঘন্টা সোশ্যাল মিডিয়াতে (ভালো ফলাফল পেয়েছে টুইটার, গুগল প্লাস, লিংকডিন, পিন্টারেস্ট হতে) গিগকে প্রোমোট করেছেন। এখন প্রচুর ফিডব্যাক থাকার পরও প্রতিদিন ১ঘন্টা রুটিন করে মার্কেটিংটা তারা চালিয়ে যাচ্ছে।
- ফাইভারের অন্য গিগগুলোতে বায়ার ফিডব্যাকগুলো দেখলে বায়ারদের নাম দেখা যায়। সেই নাম দিয়ে বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়াগুলোতে সার্চ করলে সেই বায়ারদের খুজে পাওয়া যায়। স্কাইপেও তাদের নাম দিয়ে সার্চ করলে খুজে পাওয়া যায়। সবারটা হয়ত পাওয়া যাবেনা। এবার এদেরকে যেই মিডিয়াতে পাওয়া যাবে, সেখানে যদি প্রফেশনালভাবে প্রস্তাব করেই প্রচুর কাজ বের করেছে অনেকজন।
- এদের মধ্যেই অনেকেই ইম্প্রেশন বৃদ্ধির জন্য কিছু ফেক কাজ করেছে। কারণ গিগে যত বেশি মানুষ ঢুকবে, ততই ফাইভারের সার্চে গিগটা উপরের দিকে চলে আসে। ’তারা ফেক যা করে, তা হচ্ছে, অনেকেই ৪-৫টা ফেক মেয়েদের আইডি খুলে সেই আইডি দিয়ে প্রতিদিন ৫০-১০০টা গ্রুপে তাদের গিগকে শেয়ার করেছে। মেয়ের আইডি হওয়ার কারনে ক্লিক সংখ্যা অনেক বেশি হতো।
- আর প্রতিদিন ১০টা করে বায়ার রিকোয়েস্ট সেন্ড কেউ মিস করতোনা। প্রতিদিন এ কাজ চলতো।
এবার নিচের টিপসগুলো অনুসরণ করুন আগামী ১৫দিনের জন্যঃ
- প্রতিদিন রাত ১০টার পর অনলাইনে বসে ফেসবুক, টুইটার, গুগল প্লাস, লিংকডিনে নিজের গিগকে মার্কেটিং করুন। প্রতিদিন মিনিমাম ৩-৪ঘন্টা এ মার্কেটিং চালিয়ে যাবেন।
- গিগে লিংকের সাথে অন্য সুন্দর কোন মেসেজ লিখে তারপর প্রমোশন চালিয়ে যান। এমন মেসেজ লিখুন, যাতে বায়ার গিগটাতে ক্লিক করতে আগ্রহী হয়। কোন ফেক মেসেজ লিখবেননা, কোন দয়া ভিক্ষা চেয়ে মেসেজ লিখবেননা।
- গিগের লিংকটাকে https://goo.gl/ এ লিংকে গিয়ে শর্ট করে নিন। এরপর সেই শর্ট ইউআরএল নিয়ে মার্কেটিং করুন। তারপর প্রতিদিন উপরের লিংকে গিয়ে দেখতে পাবেন, কতজন লিংকে ক্লিক করেছে। তারপর সেই ক্লিক সংখ্যাতে ক্লিক করে ঢুকুন। সেই লিংকে ঢুকলে দেখতে পাবেন, কোন সোশ্যালমিডিয়াতে মার্কেটিং করে আপনি বেশি বেনিফিটেড হচ্ছেন। এবং দেখতে পাবেন, কোন দেশের মানুষজন বেশি আপনার লিংকে ক্লিক করছে। যদি দেখেন বাংলাদেশ, ইন্ডিয়া, পাকিস্তান হতে বেশি পাবলিক ঢুকছে, সেই ক্ষেত্রে বুঝবেন, যেই সব গ্রুপে আপনি মার্কেটিং করছেন, সেগুলো পারফেক্ট গ্রুপ না। তখন অন্য গ্রুপে মার্কেটিং শুরু করবেন।
- ফাইভারের অন্য গিগগুলোতে বায়ার ফিডব্যাক হতে বায়ারের নাম সংগ্রহ করুন। সেই নাম দিয়ে বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়াগুলোতে সার্চ করলে সেই বায়ারদের খুজে পাওয়া যায়। স্কাইপেও তাদের নাম দিয়ে সার্চ করলে খুজে পাওয়া যায়। সবাইকে হয়ত খুজে পাওয়া যাবেনা। এবার প্রপোজাল পাঠানোর মত একটা ৫-১০লাইনের ফরম্যাট বানিয়ে নিন। এবার আপনার খুজে পাওয়া বায়ারদেরকে আপনার প্রপোজাল পাঠাতে শুরু করুন। একজন বায়ারকে ১সপ্তাহে দুইবার মেসেজ করবেননা। মেসেজে কোন দয়া ভিক্ষা চাবেননা।
- প্রতিদিন ১০টা করে বায়ার রিকোয়েস্ট সেন্ড করতে থাকুন।
লক্ষ্য রাখুনঃ
- উপরের টিপস অনুযায়ি কাজগুলো যেদিন থেকে শুরু করবেন, সেদিন হতে পরের ১৫দিন একই রুটিন ধরে যাতে কাজ হয়, সেই প্রস্তুতি নিয়ে কাজ শুরু করুন। না হলে ভাল ফলাফল আসবেনা।
- বাংলাদেশি, ইন্ডিয়া, পাকিস্তান, শ্রীলংকার কমিউনিটিগুলো অ্যাভোয়েড করার চেষ্টা করুন।
- কোন বায়ারকে সরাসরি মেসেজ পাঠালে কিংবা কোন বায়ার যদি নক দেয়, সেই ক্ষেত্রে প্রফেশনাল আচরণ করুন। মনে রাখবেন, usa, Canada, Australia, uk বায়াররা প্রফেশনাল আচরণ দেখলে তাদেরকেই কাজ দিতে পছন্দ করেন।
- বায়ার বিরক্ত হয়, এরকম কোন আচরণ করবেননা। আপনার নিজের ফাইভার অ্যাকাউন্টটির জন্য ক্ষতি হবে।
- কোন বায়ার পেয়ে গেলে তার কাজটি যাতে প্রফেশনাল হয়, সেই চেষ্টা করবেননা। আপনার ডেলিভারী দেখে খুশি হলেই পরের কাজগুলো পাবেন। আর যদি অপছন্দ করে সেই ক্ষেত্রে আপনার জন্য নেগেটিভ ফিডব্যাক রেডি আছে। আর একবার নেগেটিভ ফিডব্যাক পেলে পরে আর কোন কাজ পেতে অনেক কষ্টসাধ্য হয়ে যায়। যারা এলইডিপি চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের স্টুডেন্ট, তারা কাজ জমা দেওয়ার জন্য আপনার জেলার কোয়ার্ডিনেটরের সাথে কনটাক্ট করুন যাতে মানসম্মত কাজ বায়ারকে জমা দেওয়া যায়।
আজ থেকেই সবাই প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়ে কাজ শুরু করে দিন। ইনশাল্লাহ আগামী কোরবানী ঈদে নিজের অনলাইনের আয় দিয়ে পরিবারকে শপিং করে দিতে পারবেন। আরো ভাল কিছুও হতে পারে। হয়ত, আগামী কোরবানীর ঈদে নিজের টাকা দিয়ে কোরবানী করার সুযোগ হয়ে যেতে পারে। আমার টিপসের কারনে যারা সফল হলে ঈদে আমাকে গিফট দিতে ভুলে যাইয়েন না, বলে দিলাম।
No comments:
Post a Comment